জীবিতকে মৃত দেখিয়ে তিস্তা চরের দুই হাজার পরিবারের ১০৩৯ একর জমি বিক্রি।

NEWS 10 বাংলা
আপডেটঃ আগস্ট ২৭, ২০২৩ | ২:৩৯                             প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার
NEWS 10 বাংলা
আপডেটঃ আগস্ট ২৭, ২০২৩ | ২:৩৯                             প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার
Link Copied!

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ জীবিত মা-বাবা ও স্বামীকে মৃত দেখিয়ে ও মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে ভুয়া মালিক সেজে তিস্তা নদী চর এলাকার ১ হাজার ৩৯ একর জমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে এক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ধুবনী গ্রামে ভুক্তভোগী পবিবারগুলোর বসবাস। তাদের অভিযোগ এ ঘটনার সাথে পার্শ্ববতী নীলফামারী জেলার ডিমলা সাব-রেজিস্ট্রার মনীষা রায় ও ডিমলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরীসহ নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুরের একটি সিন্ডিকেট জড়িত। ইতোমধ্যে এ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

জানা গেছে, নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ছাতুনামা মৌজায় তিস্তা নদী চরে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ধুবনী গ্রামের প্রায় দুই পরিবারের ব্যক্তি মালিকানা জমি রয়েছে। দীর্ঘদিন নদীতে থাকা ওই জমি গত ৫বছর হয় জেগে উঠেছে। তখন থেকে পরিবারগুলো চাষাবাদ করে আসছেন। কিছু জমি তিস্তা নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। এমতাবস্থায় রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কিশামত মেনান নগর গ্রামের মোহাম্মদ আলী সরকারের পুত্র সফিয়ার রহমান ও পীরগাছা উপজেলার গুয়াবাড়ি গ্রামের শাহ মকবুল হোসেনের পুত্র শাহ মোঃ মেহেদী হাসান নামে ওই দুই ব্যক্তি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী এলাকার জহির প্রমানিকের পুত্র ছফের আলীসহ কয়েকজনকে ম্যানেজ করেন একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে। ওই সিন্ডিকেট ডিমলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চেধুরীর সহয়োগিতায় ওই তিস্তা চরের প্রায় ১ হাজার ৩৯ একর জমির ভুয়া মালিকার কাগজপত্র তৈরী করেন। গত ২২ জুন ডিমলা সাব রেজিস্ট্রার মনীষা রায়কে ম্যানেজ করে ২৭ জন ভুয়া মালিক সেজে সফিয়ার রহমান ও শাহ মেহেদী হাসানের কাছে ১ হাজার ৩৯ একর ১৬ শতক জমি পাওয়ার অব অ্যাটর্নীর মাধ্যমে বিক্রি করেন। যার দলিল নং- ৩২৫৯/২৩, ৩২৬০/২৩, ৩২৬১/২৩, ৩২৬২/২৩, ৩২৬৩/২৩।

কিন্তু ৩২৫৯/২৩ দলিলে দাতা সাহেরা খাতুন তার স্বামী আব্দুল আজিজকে মৃত দেখালেও প্রকৃতপক্ষে তার স্বামী জীবিত রয়েছেন। শুধু তাই নয় সাহেরা খাতুনের মৃত দেখানো স্বামী আব্দুল আজিজ ৩২৬১/২৩ নং দলিলে দাতা হিসেবে জমিও বিক্রি করেছেন। ৩২৬২/২৩ নং দলিলে দাতা মোবারক হোসেন ও বাহাদুর হোসেন তাদের পিতা আব্দুল মালেককে মৃত দেখিয়েছেনে। কিন্তু সড়েজমিনে গিয়ে দেখা যায় আব্দুল মালেক জীবিত আছেন। ৩২৬১/২৩ নং দলিলে দাতা আব্দুল লতিফ ও আব্দুস ছামাদ তাদের পিতা আবু তালেবকে মৃত দেখালেও সড়েজমিনে গিয়ে দেখা যায় আবু তালেব জীতিব রয়েছেন। ৩২৬৩/২৩ নং দলিলে দাতা মনতাজ আলী তার পিতা ওয়াহেদ আলী ও দাতা জাবেদ আলী তার মাতা জোবেদা খাতুনকে মৃত দেখালেও দেখা যায় তারাও জীবিত আছেন।

৫টি দলিলে ২৭ জন বিক্রেতা হিসেবে স্বাক্ষর করলেও তারা জমির প্রকৃত মালিক নয়। অন্যের জমির মালিক সেজে ডিমলা সাব রেজিস্ট্রার মনীষা রায় ও দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরীর সহযোগীতায় সফিয়ার রহমান ও শাহ মোঃ মেহেদি হাসানের কাছে ১ হাজার ৩৯ একর ১৬ শতক জমি পাওয়ার অব অ্যাটর্নীর মাধ্যমে বিক্রয় করেন। দাতা ২৭ জনের অনেকেই জানেন না এ জমি বিক্রয় হয়েছে। তারা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যাননি এবং দলিলেও স্বাক্ষর করেননি। তাদের নামে ভুয়া স্বাক্ষর করা হয়েছে। দলিলে ওয়ারিশ সনদ ও মৃত্যু সনদ কোনো কিছুই ব্যবহার করা হয়নি।

ভুক্তভোগী আব্দুল হামিদ, আব্দুল হাকিম, গাজী রহমান, সফিউল ইসলাম জানান, আমাদের জমি একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একটি চক্র ভুয়া মালিকানা সেজে রংপুরের সফিয়ার রহমান ও শাহ মেহেদী হাসানের কাছে বিক্রয় করেছে। এ ঘটনার সাথে ডিমলা সাব রেজিস্ট্রার মনীষা রায় ও ডিমলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরী, জমির ক্রেতা রংপুরের সফিয়ার রহমান ও শাহ মোঃ মেহেদী হাসান জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে পৃথক পৃথক ভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের সর্বশান্ত করার পায়তারা করা হয়েছে।

জমি দাতাদের মধ্যে বাহাদুর, ছফের আলী, আব্দুল লতিফ ও রেজাউল জমি বিক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তিস্তা নদীর চরে একটি সোলার প্যানেল তৈরীর জন্য বিভিন্ন কোম্পানীর সাথে সফিয়ার রহমান ও শাহ মোঃ মেহেদী হাসান আলোচনা করছেন। সেই জন্য ওই দুইজনকে আমাদের জমি কোম্পানীর কাছে বিক্রয়ের লক্ষে আলোচনার জন্য প্রতিনিধি হিসেবে পাওয়ার অব অ্যাটর্নী চায়। পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি সফিয়ার রহমান ও শাহ মোঃ মেহেদী হাসান, ডিমলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরী ও ডিমলা সাব রেজিস্ট্রার মনীষা রায়সহ কয়েকজন মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে আমাদের কাছে ১ হাজার ৩৯ একর ১৬ শতাংশ জমি প্রতারণার মাধ্যমে পাওয়ার অব অ্যাটর্নী পত্রে স্বাক্ষর নিয়েছেন। এ বিষয়ে দলিল লেখক মতিউর রহমান চৌধুরী ও ক্রেতা সফিয়ার রহমানের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা কোন কথা বলতে রাজি হননি।

ডিমলা সাব রেজিস্ট্রার মনীষা রায় বলেন, ডিমলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরী তথ্য গোপন করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এ দলিলগুলো সম্পন্ন করেছেন। বিষয়টি আমি পরে জানতে পারি। আমি এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে দলিল বাতিলের জন্য আদালতের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি। পাশাপাশি ওই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে বলেছি। অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগ:

শীর্ষ সংবাদ:
১৫ বছরে দেশ যে পরিবর্তন হয়েছে তা ৩৫ বছরেও হয়নি- সমাজকল্যাণমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত মিথ্যাবাদী দল- এড.হাজী দুলাল সৈয়দ শামসুল হকের জন্মদিনে শিশুসাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকের নাম ঘোষণা রংপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত ৭ খুলনার কয়রায় একজন বজ্রপাতে মৃত্যু খুলনার কয়রায় একজন বজ্রপাতে মৃত্যু টান টান উত্তেজনার মধ্যে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পুলিশ প্রহরায় টেনডার জমা সম্পদ রংপুরে যুবলীগ কর্মী হত্যা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার দীর্ঘ দেড় বছর পর রংপুর চিড়িয়াখানায় যুক্ত হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন ঢাকার ডেমরায় সংঘবদ্ধ মোটরসাইকেল চোরচক্রের মূলহোতাদের গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৩ প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যা ও প্রতিবাদ জানালেন খুলনার বটিয়াঘাটার ব্যবসায়ী শেখ শওকত ক‍্যারিয়ার ক্লাবের আয়োজনে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাবলিক স্পিকিং প্রতিযোগিতা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদক অর্জন করায় ববিকে সংবর্ধনা শ্যামগঞ্জ বাজারে অগ্নিকান্ডে আবারও পুড়ল দোকান ও বাড়ি রাহাদ সুমন বানারীপাড়া উপজেলায় ম্যানেজিং কমিটির শ্রেষ্ঠ সভাপতি নির্বাচিত জি-২০ সম্মেলন শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী খুলনা-৬ আসনে তৃনমুল আ’লীগ ও স্থানীয় জনগণের কাছে জনপ্রিয় ইঞ্জি.প্রেমকুমার মন্ডল গৌরীপুরে বিভিন্ন আয়োজনে পালিত হয়েছে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আবির্ভাব তিথী সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা সৌদি প্রবাসী, বিচার চান প্রধানমন্ত্রীর কাছে
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।