বৃহস্পতিবার , ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

পিতা থেকে কন্যা; পিতা দিয়েছে দেশ, কন্যা দিয়েছে উন্নয়ন

প্রকাশিত হয়েছে-

হৃদয় হোসেন ডিউক: ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ জন্মগ্রহণকারী শিশুটি বাঙালি জাতির জীবনে দিগন্তবিস্তারী এক ইতিহাস। এই শিশুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না এবং একই সঙ্গে বাঙালি পেত না এক স্বাধীন দেশ ও জাতির পিতাকে। বাঙালির সামনে মুক্তিযুদ্ধের সাহসী চেতনার বিস্তার হতো না। তিনিই বাঙালি জাতির মুক্তির প্রেরণাদায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠের উচ্চারণ বাংলাদেশের মানুষকে তথা বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার যুদ্ধে উদ্ধুদ্ধ করেছিল। বাঙালি বীরদর্পে মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেছিল সাহসী চেতনায়। নারী পুরুষ নির্বিশেষে এিশ লাখ শহীদের জীবন উৎসর্গকারী যুদ্ধ নিয়ে এসেছিল গৌরবময় বিজয় অর্জন। এই বিজয় উদ্ভাসিত হয়েছে বাঙালির মনে প্রাণে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৩ টা সময়টা ছিল হাজার বছরের বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক মাহেন্দ্রক্ষণ। এটি হল বাঙালি জাতির আত্মত্যাগের ফল।

এই আত্মত্যাগ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মন্তরে ছড়াবে অগ্নিশিখার আলো হয়ে। মানুষের মনোভূমি তারই অনুপ্রেরণায় গড়ে তুলছে স্বাধীনতার স্বপ্নভূমি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। ভারতবর্ষের রাজনীতিতে তিনিই একমাত্র নেতা যিনি ভারতবর্ষের মানচিত্রে একটি স্বাধীন দেশের প্রতিষ্ঠা করেছেন, এই ব্যাতিক্রমধর্মী অর্জন আর কারও দ্বারা সম্ভব হয় নি। বাঙালি জাতি সরণের মূহুর্তে তিনি আমাদের সামনে এক অবিস্মরণীয় মানুষ।

বাঙালির জন্য উৎর্সগ করা বঙ্গবন্ধুর জীবনের মহীরুহকে ধারণ করেছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে তথা বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। বাবা ও মেয়ে দুজনই দেশের জন্য মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তিনি পিতার মহতী চেতনা আত্মস্থ করেছেন জনগণের কল্যানে, দেশের উন্নয়নে। তার শাসনের এক যুগের মধ্যে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেয়েছে। তার শাসন ব্যবস্থার নানাদিক গণমানুষকে স্বস্তির-শান্তির জীবন-যাপন দিচ্ছে।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আজ আন্তর্জাতিক বিশ্বে নিয়ে গেছেন। তেমনি পেয়েছেন অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরষ্কার। যেমনঃ পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইউনেস্কোর ‘হুপে-বোয়ানি’ শান্তি পুরষ্কার, রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার জন্য ‘পার্ল এস বাক’ পুরষ্কার, ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘের সম্মানজনক ‘সেরেস মেডেল’, সর্বভারতীয় শান্তিসংঘের ‘মাদার তেরেসা’ পদক, ইন্দিরা গান্ধী পুরষ্কার, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ‘রিজিওনাল লিডারশীপ পুরষ্কার’, গ্লোবাল সাউথ-সাউথ পুরষ্কার, ‘চ্যাম্পিয়ণ অব দ্যা আর্থ’, পুরষ্কারে ভূষিত হন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

এখন বলা যাক বাংলাদেশের উন্নয়নঃ আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ ধরেই তার কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নয়নের মহাসড়কে। যেমন আজ একথা স্বীকার করতে হবে, খাদ্য ঘাটতি থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিনত হচ্ছে বাংলাদেশ। পার্বত্য শান্তি চুক্তি, ইউনেস্কোর তালিকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ ও ২১ ফেব্রুয়ারীর মাতৃভাষা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করা, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, এমডিজি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়ণসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ-সমতা, কৃষি, শিল্পায়ন, সমুদ্রসীমা জয়, ছিটমহল সমস্যার সমাধান, স্যাটেলাইটের নিজস্ব মালিকানা, দারিদ্র্য বিমোচন, সনএাস ও জঙ্গিবাদ দমন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রোরেল, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল সহ বহু মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়ন।

এবং সর্বশেষ ‘রূপকল্প-২০২১’ এ মধ্যম আয়ের বাংলাদেশকে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি উন্নত, আধুনিক, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক কল্যানকামী রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বিশ্বের সব উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে উড়বে বাংলাদেশ লাল-সবুজের পতাকা।
হৃদয় হোসেন ডিউক
অনার্স তৃতীয় বর্ষ
দর্শন বিভাগ,
ঢাকা কলেজ।