শুক্রবার , ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে তৈরী হওয়া খাদে পড়ে শিশুর মৃত্যু

প্রকাশিত হয়েছে-

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার তিস্তা নদীর বালু উত্তোলনের গভীর গর্তে পড়ে ফাহিম নামে চার বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৩ মার্চ) মহিষখোচা ইউনিয়নের চৌরাহা এলাকায় দুপুরে শিশুটি নিখোঁজ হয়। পরে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে রংপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল মরদেহ উদ্ধার করে। অই এলাকায় চলমান বেরিবাধের সুযোগে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে গভীর খাদ হওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবী এলাকাবাসীর। নিহত শিশু ফাহিম মহিষখোচা এলাকার মঞ্জু মিয়ার ছেলে।

এলাকাবাসী জানায়, মহিষখোচা এলাকায় বেরিবাধের কাজ চলমান। কাজের অংশ হিসেবে নদীতে পাঁচ ফুট গভীর করে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে ব্লক ফেলার কথা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় বেশ কিছু চক্র দিনে রাতে ওই জায়গা থেকে অবৈধ মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে। ফলে সেখানে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়। শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা ধুধু বালিচর হলেও নদীর ধারে বেরিবাধের ওই স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা হয়। এতে প্রায় ২৫/৩০ ফুট গভীর খাদের তৈরি হয়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী। শুক্রবার দুপুরে জুমআর নামাজের আগে ফাহিমসহ কয়েকটি শিশু ওই জায়গায় খেলতে গিয়ে গভীর খাদে পড়ে যায়। এলাকাবাসী খোজাখুজি করে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। আদিতমারী ফায়ার সার্ভিসের একটি দল গিয়ে খোজাখুজি করে না পেয়ে রংপুর থেকে ডুবুরি দল ডেকে পাঠায়। পরে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ডুবুরি দল এসে সোয়া পাচটার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে।

ফাহিমের বাবা মঞ্জু মিয়া বলেন, বালু তুলে বিক্রি করায় সেখানে গভীরতা হয়। এতেই আমার সন্তান ডুবে যায়। আমি এর বিচার চাই।

এলাকাবাসী এমদাদুল হক ,মতিন মিয়া দাবী করেন, ঠিকাদারের লোকের সহায়তায় দীর্ঘদিন বালু তোলায় এখানে গভীর হয়েছে। সেখানেই আজ শিশুটি পড়ে মারা গেলো। বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

এদিকে বেরিবাধের জায়গায় এত গভীর খাদ হওয়ায় কিভাবে সেখানে বালুবস্তা ও ব্লক ডাম্পিং হবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়াও সেখানে কাউন্টিং ব্লক আগেই ফেলায় মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ঠিকাদারের প্রতিনিধি নুরে আলম সিদ্দিকী বাবুকে (01711-075318) একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বেরিবাধের জায়গায় পাঁচ ফিটের বেশি গভীর হওয়ার সুযোগ নেই। সেখানে শিশু মৃত্যুর বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।

বস্তা ডাম্পিং এর আগে ব্লক ফেলার বিষয়ে দ্রুত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।

এ বিষয়ে রংপুর ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দলের টিম লিডার মিজান হোসেন বলেন, নিখোঁজের খবর পেয়ে আমরা এখানে এসে নদী থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।